মাছ কেলেংকারি!

গত তিন চার দিন ধরে জ্বরে ভুগছি। যতযাই হোক আমার গোসল করা মিস হয়না। এই জ্বর নিয়াও গোসল মিস করি নাই। বলা যায় গোসল করাও একটা আর্ট। তার উপর আজকে জুম্মাবার।





আজকে সকাল থেকে আমাদের বাসায় কারেন্ট নাই। তাই পানিও নাই। ঠিক করলাম জ্বর যেহেতু ভাল হচ্ছেনা পুকুর থেকে দুইটা ডুব মেরে আসি।
যেই ভাবা সেই কাজ গেলাম পুকুরে। সাবান শ্যাম্পু লাগিয়ে যেই ঝাপ দিলাম পুকুরে, হঠাৎ দেখি লুংগির ভিতর কি জানি ছটফট করছে।

ছটফটানির কারনে সুড়সুড়ি লাগছিলো আর লজ্জাও পেলাম। পরে উকি মেরে দেখি যা ভাবছি আসলে তা নয়। এটা একটা কার্প মাছের বাচ্চা। আহা! আমার ভিষন মায়া হতে লাগলো।
লক্ষ করলাম শিং, মাগুর কিংবা বোয়াল মাছের মত এর মাথায় চুল নেই।

সেকি! এই মাছটারও কি আমার মত চুল পড়ার সমস্যা? কি করা যায় ভাবলাম।

আমার "কেটোকোনাজল" শ্যাম্পুটা নিয়ে মাছের মাথায় লাগিয়ে দিলাম। শ্যাম্পুর ফ্যানা চোখে লাগতেই মাছটা আরও বেশি ছটফট শুরু করলো। আহা! এইতো কাজ হচ্ছে। যেই মাছটা কখনো শ্যাম্পু চোখে দেখেনি, কিন্তু সেই মাছের চোখই শ্যাম্পুতে জ্বালা করছে।
মাছটা খুশিই হয়েছে। এই ভেবে আমার চোখেও পানি চলে আসলো।

শ্যাম্পু মাখিয়ে দুই মিনিট তাকে পুকুর ঘাটের সিড়িতে শুইয়ে রাখলাম। এরপর তাকে গোসল করাতে নিয়ে গেলাম। ইচ্ছা ছিলো গোসল করিয়ে ভাল করে মাথা ও শরীর মুছিয়ে তাকে পুকুরে ছেড়ে দেব। নাহলে মাছের ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।

কিন্তু গোসল করাতে নিয়ে দেখি সে আর ছটফট করছেনা। কি হয়েছে মাছটার? তার বুকে কান লাগিয়ে শুনতে চেষ্টা করলাম সে বেঁচে আছে কিনা। নাহ, বুকে কোন শব্দ করছেনা। বেচারা আনন্দে মারা গেছে। আহ! আফসোসের সাথে আনন্দও হল। বেচারা শেষমেশ গর্বের সাথে মৃত্যু বরন করলো। পৃথিবীর কোন মাছের ভাগ্যে এমন সৌভাগ্য ছিল কিনা আল্লাহই ভাল জানে!

পরে কি আর করা। মাছটাকে বাসায় নিয়ে এলাম। আম্মুকে বললাম, একটা কর্প মাছ পেলাম পুকুরে। দুপুরে দোপেয়াজো করে দিয়েন।
আম্মু কানমলা দিয়ে বললেন। এত্ত বড় হইয়াও, রুই মাছও চিনিস না?
Previous
Next Post »

আপনি কি কুবের কে কিছু বলতে চান? তাহলে সেটা মন্তব্য করে ফেলুন এখনি! EmoticonEmoticon